সফলতার গল্পসমগ্র

মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার কার্যকর কিছু পদ্ধতি

নিজেকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বা বড় কোন কাজ করার জন্য যতটা শারীরিক শক্তির প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন মানসিক শক্তির। মানুষ সাধারণত তখনই হাল ছেড়ে দেয় যখন তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে। চলো জেনে নেই, যে কাজগুলো তোমাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করে তুলবে সে সম্পর্কে।

১. ইতিবাচক ও নেতিবাচক চিন্তার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখো:
ইতিবাচক ও নেতিবাচক এই দুই ধরণের চিন্তাই মনের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। ইতিবাচক চিন্তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যখন তুমি ভালো কিছু চিন্তা করবে, বিশ্বাস করবে যে ভালোকিছু হবে, তখন দেখবে সত্যিই ভালো অনেক কিছুই ঘটছে। সবসময় নেতিবাচক চিন্তা না করাই ভালো তবে মাঝেমাঝে নেতিবাচক চিন্তাও কাজে দেয়। এটি তোমাকে তোমার ভুল সম্পর্কে আগেভাগেই সচেতন করে দেয়।

২. দয়ালু ও করুণাময় হও:
সবসময় চেষ্টা করবে বিভিন্ন কাজে অন্যদের সহায়তা করতে, ভালো ব্যবহার করতে, কেউ ভুল করলে ক্ষমা করে দিতে। এর মাধ্যমে জীবনে নেতিবাচক আবেগের পরিমাণ অনেকাংশেই কমে আসবে। জীবনে নেতিবাচক আবেগের পরিমাণ কমিয়ে ইতিবাচক আবেগের পরিমাণ বাড়াতে পারলে দেখবে মানসিকভাবে অনেক শান্তি পাচ্ছো। আর তখন দেখবে নিজেকে মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী মনে হবে।

৩. এমন জিনিসগুলোর দায়িত্ব নাও যা তুমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে:
একজন বুদ্ধিমান মানুষ, মানসিকভাবে শক্তিশালী মানুষ কখনোই সব দায়িত্ব গ্রহণ করে না। কোন একটি দায়িত্ব নিয়ে তা শেষ করতে না পারলে তা তোমাকে মানসিকভাবে অনেক যন্ত্রণা দিবে। তাই দায়িত্ব নেয়ার আগে তোমার ক্ষমতা বুঝে দায়িত্ব নেয়া উচিত। আর যেই কাজ তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে তা স্বীকার করে নাও, এতে মানসিকভাবে অনেক শান্তি পাবে।

৪. ব্যক্তিগতভাবে সবকিছু গ্রহণ করা বন্ধ করো:
জীবনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। অনেক সময় দেখবে একটি ঝামেলা চাইলেই তুমি এড়িয়ে যেতে পারছো, তখন ইচ্ছে করে সেটার সাথে জড়িয়ে পড়ার প্রয়োজন নেই। শুধু শুধু বাজে ঝামেলায় জড়িয়ে গিয়ে মানসিক শক্তি নষ্ট করার প্রয়োজন নেই।

৫. অপ্রয়োজনীয় জিনিস চাওয়া থেকে বিরত থাকো:
সবকিছু পেতে হবে, সব কাজ তোমাকেই করতে হবে এমন চিন্তা থেকে দূরে থাকো। অপ্রয়োজনীয় জিনিস পেতে গিয়ে শুধু শুধু মানসিক অশান্তি বাড়িয়ো না। অতীতে যা ঘটে গেছে তা তুমি চাইলেও কখনো বদলাতে পারবে না মানসিকভাবে শক্তিশালী মানুষ কখনোই সবকিছু পেতে চায় না, তারা সবসময় অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো এড়িয়ে চলে। “মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস হচ্ছে মানসিক শান্তি”।

৬. আবেগের সাথে যুক্তির ভারসাম্য রাখো:
আবেগ সবসময়ই মানুষের চিন্তা-ভাবনাকে প্রভাবিত করে। তাই আবেগের সাথে যুক্তির ভারসাম্য থাকা জরুরি। একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সব সময় আবেগের সাথে যুক্তির সামাঞ্জস্য রেখে সিদ্ধান্ত নিবে। সব সময় আবেগপ্রবণ না হয়ে আবেগের সাথে যুক্তির সামাঞ্জস্য রাখতে পারলে দেখবে মানসিকভাবে অনেক শক্তি পাচ্ছো, শান্তি পাচ্ছো।

৭. অতীত নিয়ে ভাবা বাদ দাও:
অতীতে যা ঘটে গেছে তা তুমি চাইলেও কখনো বদলাতে পারবে না। তাই অতীত নিয়ে বসে থেকে মানসিক অশান্তি বাড়িয়ে, বর্তমান সময়টাকে নষ্ট করো না। মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হলে অতীত নিয়ে ভাবা বাদ দিয়ে বর্তমান সময়টাকে নিয়ে চিন্তা করো। বর্তমান সময়টাকে কীভাবে পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগানো যায় সেই চিন্তা করো।

৮. অন্যের সফলতা দেখে ক্ষুব্ধ হওয়া বাদ দাও :
অন্যের সফলতা দেখে ক্ষুব্ধ হলে দেখবে তা তোমার নিজের লক্ষ্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদের নিয়ে চিন্তা করতে করতে নিজের কাজটাই আর করা হবে না, মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে। তাই অন্যদের নিয়ে চিন্তা করা, তাদের সফলতা দেখে ক্ষুব্ধ হওয়া বাদ দাও। নিজের উপর ভরসা রেখে, বিশ্বাস রেখে নিজের কাজগুলো মনোযোগ দিয়ে করো। দেখবে, সেই কাজেও সফলতা পাবে আর মানসিকভাবেও অনেক শক্তি পাবে।

এভাবেই তুমি চাইলে অন্যদের তুলনায় তোমার মানসিক শক্তি অনেকাংশেই বাড়িয়ে নিতে পারো আর নিজেকে এগিয়ে নিতে পারো অনেকগুণ।